
অবসর সময়ে ঘুরে আসতে পারেন রাজধানীর সন্নিকটে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার দর্শনীয় স্থানগুলোতে। দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে ‘সোনারগাঁও জাদুঘর’ (বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন) ও পানাম নগরী অন্যতম।
এক সময়কার প্রাচীন বাংলার স্বাধীন রাজধানী সোনারগাঁও উপজেলার এসব স্থান দেশের মানুষকে ঐতিহ্যের টানে আকর্ষণ করে। তাই বছরের অধিকাংশ সময়ই সোনারগাঁও জাদুঘর, প্রাচীন পানাম নগরী এবং পাশেই বৈদ্যের বাজার মেঘনা নদীর পাড়েও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা দর্শনার্থী দিয়ে লোকে লোকারণ্য থাকে।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনটি সোনারগাঁও জাদুঘর নামেই পরিচিত। রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ২৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থান সোনারগাঁও উপজেলার। সোনারগাঁও এক সময় মসলিনের জন্য বিখ্যাত ছিল। কিন্তু কালের বিবর্তনে মসলিনের পরিবর্তে জামদানি শাড়ি এ স্থান দখন করে নেয়। তবে মসলিনের কারুশিল্প না থাকলেও জামদানির কারুপল্লীর অস্তিত্ব দেখা মিলবে সোনারগাঁওয়ের গ্রামে গ্রামে। এছাড়া সোনারগাঁও জাদুঘরের ভেতরেই দেখা মিলবে ২০-২৫ টি জামদানির দোকান, যেখানে তাঁতীরা সরাসরি তাদের বানানো জামদানি শাড়ি দোকানে পসরা সাজিয়ে বিক্রি করছে। সোনারগাঁও জাদুঘরের ভেতরেই রয়েছে কারুপল্লী, নৌকা ভ্রমণ ও টিকিট কেটে মাছ ধরার সুযোগ। তবে সোনারগাঁও জাদুঘর দেখতে আসা দর্শনার্থীরা সাধারণত একবারের জন্য হলেও ঘুরে যান পানাম নগরীতে।
বারো ভূঁইয়াদের স্থান নাম পরিচিত সোনারগাঁও। এখানে বারো ভূঁইয়াদের অন্যতম ঈসা খাঁ দীর্ঘদিন সোনারগাঁও শাসন করেছিলেন। সেইসময় সোনারগাঁও এর চারপাশ নদী দ্বারা বেষ্টিত ছিল বলে সহজে সোনারগাঁকে কোনো শত্রু আক্রমণ করতে পারতো না। ১৯৭৫ সালে এখানে প্রতিষ্ঠা করা হয় বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ঐতিহাসিক পানামনগর। পানামনগরের পাশেই রয়েছে ঐতিহাসিক পানাম পুল। সোনারগাঁওয়ের তৎকালীন রাজকার্য পরিচালিত হতো পানাম নগরী থেকে। বর্তমানে আমরা যে পানাম নগরী দেখি তা আসলে ব্রিটিশ আমলে গড়া অবকাঠামো। তবে বাস্তবে প্রাচীন পানাম নগরী চাপা পড়ে গেছে আধুনিক পানামের নীচে। পানাম নগরীতে গেলে দেখা যায়, চারশত বছরের পুরানো মঠবাড়ি। এর মধ্যে রয়েছে ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্য কুঠি ‘নীলকুঠি’, যা পানাম নগরীর পশ্চিম দিকে এখনও দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে। এছাড়া এই প্রাচীন নগরীতে কাশিনাথের বাড়ি ছাড়াও রয়েছে নানা প্রাচীন ভবন। পানামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে পঙ্খীরাজ খাল।